BDGENERALNewsPOLITICS

হাসনাত আব্দুল্লাহ:সমন্বয়ক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

হাসনাত আব্দুল্লাহ হলেন একজন বাংলাদেশী ছাত্রনেতা ও ২০২৪ কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যের বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন আহ্বায়ক।হাসনাত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ:সমন্বয়ক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন
সমন্বয়ক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

হাসনাত আব্দুল্লার ব্যক্তিগত জীবন ও শিক্ষাগত যোগ্যতা

কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানায় হাসনাত আব্দুল্লাহ ১৯৯৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বর্তমান বয়স ২৭ বছর |হাসনাত আব্দুল্লাহ কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার দেবিদ্বার সরকারি রেয়াজ উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে 2014 সালে মাধ্যমিক পাস করেন।এবং পারুয়ারা আব্দুল মতিন খসরু কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ এ উচ্চ বিদ্যালয় পাশ করেন।হাসনাত  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।

শিক্ষাজীবনে তিনি যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক ও ছাত্রসংগঠনের সাথে, যা পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে তার আত্মপ্রকাশের পথ তৈরি করে।

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ১২ই অক্টোবর হাসনাত আব্দুল্লাহ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।


২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাসনাত আবদুল্লাহর ভূমিকা

২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার পুনর্বহালের বিরুদ্ধে যখন ছাত্রসমাজ রাস্তায় নেমে আসে,তখন হাসনাত ছিলেন “Students Against Discrimination” আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক।তার জোরালো নেতৃত্ব, নির্ভীক অবস্থান এবং ছাত্রদের স্বার্থে সরব ভূমিকা দেশব্যাপী তরুণ সমাজকে একত্রিত করে।এই আন্দোলনের ফলে সরকার ব্যাপক চাপে পড়ে এবং গণবিক্ষোভের মুখে তৎকালীন সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়। এই ঘটনাই হাসনাত আবদুল্লাহকে জাতীয় রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে আসে।


হাসনাত আবদুল্লাহর রাজনৈতিক দল

আন্দোলনের সফল পরিণতির পর, ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হাসনাত আবদুল্লাহ “জাতীয় নাগরিক পার্টি” (National Citizens’ Party – NCP) এর প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।পরবর্তীতে, তিনি দলের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এদিকে, NCP ঘোষণা দেয় যে তারা ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং জনগণের অধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে।

অতএব, হাসনাত স্পষ্ট করে দেন, দলীয় সিদ্ধান্তে কোনো ধর্মবিরোধী বা উগ্র মতাদর্শের স্থান নেই।


হাসনাত আবদুল্লাহর আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সম্পর্ক নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি

হাসনাত আবদুল্লাহ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে বলেন,ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হবে সমমর্যাদার ভিত্তিতে, সুশাসন ও ন্যায্যতার আলোকে তিনি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নেন এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হন।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে হাসনাত আবদুল্লাহর অবস্থান

তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন যে, গত কয়েক বছরে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

তিনি অর্থনৈতিক দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে তরুণ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান।


হাসনাত আবদুল্লাহর বিতর্ক ও সমালোচনা

হাসনাত আব্দুল্লার সেনাবাহিনী কে নিয়ে মন্তব্য

২০২৫ সালের ২১ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে হাসনাত  আবদুল্লাহর একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে আলোচনার প্রেক্ষিতে নেত্র নিউজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে সেনাবাহিনীর আন্ত:বাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর মন্তব্য প্রকাশিত হয়।ওই প্রতিবেদন এর প্রেক্ষিতে দৈনিক প্রথম আলো তাদের অনলাইন সংস্করণে “হাসনাতের বক্তব্য’অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ক গল্পের সম্ভার’নেত্র নিউজ কে বলল সেনাসদর”শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সময় টেলিভিশনের কর্মচারীর ছাটাই  সম্পর্কে  হাসনাত আব্দুল্লার সমালোচনা

২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ফ্রান্স ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এএফপি একটি সংবাদ প্রকাশ করে যাতে অভিযোগ করা হয় সময় টিভিতে কর্মরত ৫ গণমাধ্যম কর্মীর একসঙ্গে চাকরি যাওয়ার ঘটনায় হাসনাবাদ সংশ্লিষ্টতা ছিল।সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সময় টিভির পরিচালক মোহাম্মদ হাসান বিবিসি বাংলা কে নিশ্চিত করেন যে হাসনাত আব্দুল্লাহ সহ ১৫ জনের একটি দল তাদের অফিসে গিয়ে কয়েকজনকে চাকরি থেকে বাদ দিতে চাপ দিয়েছিলেন।তবে হাসনাত আব্দুল্লাহ সিটি গ্রুপে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও চাপ দেয়ার কথা অস্বীকার করেন।এছাড়াও একটি পোস্টা হাসনাত আব্দুল্লাহ এএফপি বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার অভিযোগ আনেন।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

. হাসনাত আব্দুল্লাহ নামটি কেন সাম্প্রতিককালে আলোচনায়?

উত্তর: হাসনাত আব্দুল্লাহ নামটি আলোচনায় এসেছে তার নেতৃত্বাধীন “বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন”-

এর কারণে, যেখানে তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়েছেন।


. ছাত্রদের জন্য এই আন্দোলন কতটা প্রাসঙ্গিক?

উত্তর: এই আন্দোলন সরাসরি ছাত্রদের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত, কারণ এটি শিক্ষা ব্যবস্থায় বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে কাজ করে।


. আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কীভাবে উপকৃত হচ্ছে?

উত্তর: শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের অধিকারের বিষয়ে সচেতন হচ্ছে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখছে এবং প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার সাহস অর্জন করছে।


. হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্ব কেমন?

উত্তর: তিনি তরুণ, প্রগতিশীল এবং জনসম্পৃক্ত নেতৃত্ব প্রদান করছেন। হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ কিন্তু প্রভাবশালীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।


. এই আন্দোলন শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক কিনা?

উত্তর: না, এটি কেবল বিশ্ববিদ্যালয় নয়—কলেজ এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও সচেতনতা গড়ে তুলছে, বিশেষ করে প্রান্তিক অঞ্চলগুলোর শিক্ষার্থীদের মাঝে।


. আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কীভাবে বদলাতে পারে?

উত্তর: এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বগুণ, যৌক্তিক চিন্তা এবং ন্যায্যতার প্রতি দায়বদ্ধতা তৈরি করছে—

যা ভবিষ্যতে একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করবে।


. এই আন্দোলনের পেছনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রভাব আছে কি?

উত্তর: না, এই আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে অরাজনৈতিক। এটি একটি স্বাধীন ছাত্র প্ল্যাটফর্ম যেখানে যেকোনো শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারে, মতাদর্শ নির্বিশেষে।


. হাসনাত আব্দুল্লাহ কীভাবে আন্দোলন সংগঠিত করেন?

উত্তর: তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সভা, সেমিনার, মানববন্ধন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং

গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একত্রিত করেন এবং প্রশাসনের কাছে দাবি উপস্থাপন করেন।


. সাধারণ শিক্ষার্থী কীভাবে এই আন্দোলনের অংশ হতে পারে?

উত্তর: যে কেউ চাইলে ফেসবুক পেজ, অনলাইন ফোরাম অথবা ক্যাম্পাসে সরাসরি যুক্ত হয়ে আন্দোলনের সদস্য হতে পারে এবং সচেতনতা মূলক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে।


১০. আন্দোলনের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য কী?

উত্তর: দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে কোনো শিক্ষার্থী তার পরিচয়,

আর্থিক অবস্থা কিংবা ভাষাগত পার্থক্যের কারণে বঞ্চিত হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *