ই-পাসপোর্ট করার সহজ উপায়-২০২৫|E-Passport

বর্তমানে বাংলাদেশে পাসপোর্ট আবেদন করা আগের চেয়ে অনেক সহজ ও দ্রুত হয়েছে, বিশেষ করে ই-পাসপোর্ট চালুর পর। আপনি ঘরে বসেই অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন, এবং নির্দিষ্ট সময়ে হাতে পেয়ে যান আপনার পাসপোর্ট।
এই ব্লগে আমরা জানবো কীভাবে আপনি ২০২৫ সালে:
- অনলাইন পাসপোর্ট আবেদন কিভাবে করবেন
- ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণ ও ছবি কেমন হওয়া উচিত
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- পাসপোর্ট ফি ও ডেলিভারি সময়
- অনলাইন আবেদন লিংক ও টিপস
১. অনলাইন পাসপোর্ট আবেদন কিভাবে করব
বাংলাদেশে এখন শুধুমাত্র ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হচ্ছে। এটি আপনি অনলাইনে আবেদন করে করতে পারবেন। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
ধাপ ১: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান
👉 https://www.epassport.gov.bd
ধাপ ২: নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন
- আপনার ইমেইল ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন
- একটি ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড সেট করুন
ধাপ ৩: আবেদন ফরম পূরণ করুন
- আপনার ব্যক্তিগত, ঠিকানা, পেশাগত তথ্য দিন
- জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সঠিক তথ্য দিন
৪: ছবি ও স্বাক্ষর আপলোড করুন
- নির্ধারিত ফরম্যাটে ছবি ও স্বাক্ষর দিন (নিচে বিস্তারিত)
৫: সময় নির্ধারণ ও পাসপোর্ট অফিস নির্বাচন করুন
- আপনার সুবিধামত একটি সময় সিলেক্ট করুন
- আপনার নিকটস্থ ই-পাসপোর্ট অফিস বেছে নিন
২. ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণ করতে যা লাগবে
ফরম পূরণের সময় যেসব তথ্য লাগবে:
- পূর্ণ নাম (NID অনুযায়ী)
- জন্ম তারিখ
- বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা
- পেশা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা
- পিতা-মাতা ও অভিভাবকের নাম
- জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
- মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল
৩. ই-পাসপোর্ট এর জন্য ছবি কেমন হওয়া উচিত
ই-পাসপোর্ট ছবির জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড রয়েছে। যেমন:
- সাইজ: ৩০০ x ৩৬০ পিক্সেল
- ব্যাকগ্রাউন্ড: সাদা
- মুখ সোজা করে তুলতে হবে
- চশমা না পরে তুলুন (যদি না মেডিকেল কারণ থাকে)
- ছবিতে ছায়া বা রিফ্লেকশন যেন না থাকে
ছবি রিসাইজ করার আগে ছবি তুলুন পাসপোর্ট সাইজ অনুযায়ী।
৪. পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগে
আপনার আবেদনটি সফল করতে নিচের ডকুমেন্টগুলো প্রস্তুত রাখুন:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- জন্ম সনদ (১৮ বছরের কম হলে)
- পূর্ববর্তী পাসপোর্ট (যদি থাকে)
- শিক্ষাগত সনদপত্র (প্রয়োজনে)
- ব্যাংক চালান/পেমেন্ট রশিদ
- সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- নাগরিক সনদ (কিছু ক্ষেত্রে)
৫. পাসপোর্ট ফি কত বাংলাদেশ ২০২৫
পাসপোর্ট মেয়াদ | ডেলিভারি টাইপ | ফি (BDT) |
---|---|---|
৫ বছর (৪৮ পৃষ্ঠা) | সাধারণ | ৪,০২৫ টাকা |
৫ বছর (৪৮ পৃষ্ঠা) | জরুরি | ৬,৩২৫ টাকা |
১০ বছর (৪৮ পৃষ্ঠা) | সাধারণ | ৫,৭৫০ টাকা |
১০ বছর (৪৮ পৃষ্ঠা) | জরুরি | ৮,০৫০ টাকা |
🔔 পেমেন্ট করতে পারবেন সোনালী ব্যাংক, বিকাশ, নগদ, রকেট মাধ্যমে।
৬. পাসপোর্ট আবেদন ডেলিভারি সময়
আপনি কোন ধরনের ডেলিভারি চাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে সময় লাগে:
- সাধারণ ডেলিভারি: ১৫-২১ কার্যদিবস
- জরুরি ডেলিভারি: ৭-১০ কার্যদিবস
তবে সরকারি ছুটি ও অতিরিক্ত চাপ থাকলে একটু দেরি হতে পারে।
৭. অনলাইন পাসপোর্ট আবেদন লিংক
👉 অফিসিয়াল আবেদন লিংক:
https://www.epassport.gov.bd
এখানে আপনি নতুন আবেদন, আবেদন স্ট্যাটাস ট্র্যাকিং এবং সময় নির্ধারণ সব করতে পারবেন।
৮. পাসপোর্ট করার সহজ টিপস ২০২৫
- সব তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী দিন
- ছবি ও ডকুমেন্ট PDF বা JPEG ফরম্যাটে আপলোড করুন
- নির্ধারিত সময়েই অফিসে উপস্থিত হোন
- আবেদন শেষে রিসিপ্ট বা ট্র্যাকিং নম্বর সংরক্ষণ করুন
- প্রয়োজনে হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন: 105 (জাতীয় হেল্পলাইন)
✅ উপসংহার
২০২৫ সালে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ ও আধুনিক হয়েছে। আপনি ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন এবং নির্ধারিত সময়ে হাতে পাবেন আপনার পাসপোর্ট। সঠিক তথ্য দিয়ে ধাপে ধাপে আবেদন করলে কোনো ঝামেলা হবে না। আশা করি এই ব্লগটি আপনাকে অনলাইন পাসপোর্ট আবেদন করতে পুরোপুরি সাহায্য করবে।
আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চান, নিচে কমেন্ট করতে ভুলবেন না।
📢 পোস্টটি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন যাতে সবাই উপকৃত হয়।
পাসপোর্ট আবেদন সম্পর্কে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
1. অনলাইন পাসপোর্ট ফরম পূরণ করতে কি কি দরকার?
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, সদ্যতোলা ছবি, স্বাক্ষর, ব্যক্তিগত তথ্য, এবং যোগাযোগের ঠিকানা লাগবে। ফরম পূরণের সময় সঠিক তথ্য দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
2. ই-পাসপোর্ট এর ছবি কেমন হওয়া উচিত?
ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হতে হবে, মুখ সোজা করে তুলতে হবে, কোনো ছায়া বা চশমা থাকা যাবে না। ছবির রেজোলিউশন ও মাপও সরকারি গাইডলাইনের সাথে মিলতে হবে।
3. পাসপোর্ট আবেদন করতে কোন কোন ডকুমেন্ট লাগবে?
জাতীয় পরিচয়পত্র, পূর্ববর্তী পাসপোর্ট (যদি থাকে), ছবি, শিক্ষাগত সনদ (প্রয়োজনে), নাগরিক সনদ, এবং পেমেন্ট রশিদ প্রয়োজন হতে পারে।
4. অনলাইন পাসপোর্ট আবেদন করার পর কী করব?
আবেদন জমা দেওয়ার পর নির্ধারিত সময় ও অফিস নির্বাচন করে উপস্থিত হতে হবে বায়োমেট্রিক এবং ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য।
5. পাসপোর্ট হাতে পেতে কত দিন লাগে?
সাধারণ ডেলিভারিতে ১৫-২১ কার্যদিবস এবং জরুরি ডেলিভারিতে ৭-১০ কার্যদিবস সময় লাগে।
6. পাসপোর্ট আবেদন অনলাইনে জমা দেওয়ার পর স্ট্যাটাস কিভাবে চেক করব?
আপনি https://www.epassport.gov.bd/track লিংকে গিয়ে আপনার আবেদন নম্বর দিয়ে স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন।
7. পাসপোর্ট আবেদন করতে মোবাইল নাম্বার বা ইমেইল থাকা কি বাধ্যতামূলক?
হ্যাঁ, আবেদনকারীকে অবশ্যই একটি সচল মোবাইল নম্বর ও ইমেইল প্রদান করতে হবে, কারণ তথ্য যাচাই ও যোগাযোগ এই মাধ্যমে হয়।
8. কেউ যদি বিদেশ থেকে আবেদন করতে চায়, কীভাবে করবে?
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন/কনস্যুলেট থেকে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায়। প্রতিটি দেশে আলাদা নিয়ম থাকায় স্থানীয় মিশনের ওয়েবসাইট দেখুন।